শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি

এ আর্টিকেলে যা থাকছে

পৃথিবীর সব চেয়ে স্বাভাবিক বা সাধারণ একটা দৃশ‍্য হলো শিশু মায়ের বুকের দুধ খাচ্ছে। কিন্তু দেখে যতটা সহজ মনে হয় আদৌ এ বিষয় তত সহজ নয়। প্রাকৃতিকভাবে মায়ের বুকে দুধ আসলেও শুরুতে বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রক্রিয়াটি মা এবং শিশু দুজনের জন্যই বেশ জটিল। সঠিক পদ্ধতি এবং পজিশনে দুধ খাওয়ানোর জ্ঞান মা এবং শিশুর প্রথমেই স্বাভাবিকভাবে থাকে না।

কোন কোন মায়ের ক্ষেত্রে শিশুকে দুধ খাওয়ানো শুরুতেই হয়তো সহজ মনে হয়। কারও ক্ষেত্রে অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে, আবার কোন কোন মায়ের দুধ খাওয়ানোর প্রক্রিয়াটা সহজও মনে হয় না, আবার কঠিনও মনে হয়না। তবে যেটাই হোক না কেন দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে অনেক কিছু জানার আছে। বিশেষ করে প্রথম মা, সি সেকশন বা অন‍্য কোনো শারীরিক জটিলতায় দুর্বল থাকা মায়ের জন‍্য বুকের দুধ খাওয়ানোর কৌশল জানাটা বেশ জরুরি।

যখন আপনি শিশুকে দুধ খাওয়ানোর কৌশলগুলো জানবেন, যেমন: দুধ খাওয়ানোর সময় শিশুকে কোন পজিশনে ধরতে হবে, শিশু পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে কিনা কিভাবে বুঝবেন, কখন শিশুর এক স্তনের দুধ খাওয়া শেষ হয় এবং অন্যটি খাওয়ানোর সময় হয় এ সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা থাকবে, তখন নিজেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে হবে।

শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় প্রথম দিকে নতুন মায়ের অনেক ভুল হয়। ভুল করে করে আপনি যখন আপনার জন্য সবথেকে সহজ উপায় বের করে ফেলতে পারবেন তখন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোটা আপনার জন্য সবচেয়ে সুখের কাজ হয়ে উঠবে।

যখন আপনার বুকে দুধ আসবে

মায়ের বুকের দুধ মূলত ৩ টি পর্যায়ে আসে। প্রকৃতি আপনার শিশুর বয়সের সাথে মিল রেখে যখন যে উপাদানগুলো দরকার সেভাবেই নকশা করে। একদম প্রথম দিন থেকে শুরু করে ১০ দিন বা এরপরের দিনগুলোর জন্যেও শিশুর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত খাবার তৈরি করে রাখে। 

  • শালদুধ বা কলোস্ট্রাম (Colostrum) 

শিশুর জন্মের ঠিক পরমুহূর্তে মায়ের বুকে প্রথম হলুদাভ আঠালো যে দুধ আসে সেটাকেই শালদুধ বা কলোস্ট্রাম বলে। সব মায়েরই প্রথমে এই হলুদাভ আঠা বের হয়। প্রথমদিকে সাদা তরল দুধ না দেখলে মোটেও ঘাবড়াবেন না। শিশুর জন্মের পর প্রথম ২-৩ দিন শাল দুধ বের হয়। পুষ্টিগুণে ভরপুর শাল দুধের উপকারিতা অনেক। 

প্রোটিন, ভিটামিন এবং বিভিন্ন খনিজের মিশ্রণ এই শালদুধ, যা শিশুকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও শালদুধ অ্যান্টিবডিতে ভরপুর, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। এটি শিশুর অন্ত্রের ভেতরে প্রলেপ তৈরি করে, তার অপরিণত রোগ প্রতিরোধ ব‍্যবস্থাকে রক্ষা করে এবং অ্যালার্জি ও হজমের সমস্যা থেকে তাকে রক্ষা করে।

এছাড়াও, এটি শিশুর প্রথম পায়খানা তৈরি  হতে সাহায্য করে এবং জন্ডিসের ঝুঁকি কমায়। শিশুর জন্য মায়ের বুকের এই শালদুধ কোন সাধারণ খাবার নয় – এটি ‘লিকুইড গোল্ড’ বা ‘তরল সোনা’। এই দুধ আপনি সম্ভবত খুব কম তৈরি করবেন, তবে শিশুকে প্রথম দিকে খাওয়ানোর জন্য এই “তরল সোনার” কয়েক চা চামচই যথেষ্ট। 

আপনার শিশু শুরু থেকে নিয়মিত দুধ খেলে, কয়েক দিনের মধ্যে আপনার শরীর দুধ তৈরির পরিমাণ বাড়িয়ে দিবে। 

  • ট্রানজিশনাল মিল্ক – দুধের দ্বিতীয় স্তর:

ট্রানজিশান মিল্ক, যা শালদুধ এবং ম্যাচিউর দুধের মাঝেমাঝি পর্যায়ে আসে। সাধারণত তৃতীয় বা চতুর্থ দিনে এই দুধ আসে। ট্রানজিশনাল দুধের রং অনেকটা দুধ এবং কমলার রস এর মিশ্রণ এর মত লাগে। তবে এর স্বাদ শিশুর কাছে আগের থেকে বেশি ভালো লাগে। 

এটিতে শালদুধের তুলনায় কম ইমিউনোগ্লোবুলিন (Immunoglobulins) এবং প্রোটিন রয়েছে। তবে এতে অনেক বেশি ল্যাকটোজ, চর্বি এবং ক্যালোরি রয়েছ।

তৃতীয় দিনেও যদি আপনার বুকের দুধ বৃদ্ধি না পায় তবে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ এই সময় আপনার শিশুর পেট আসলে একটি বাদামের সমান। তাই শিশুর খুব বেশি দুধের প্রয়োজন হয় না। 

massage
শিশুকে কিভাবে মালিশ করা ভালো
  • পরিণত বা ম‍্যাচুর দুধ – দুধের দ্বিতীয় স্তর

শিশুর জন্মের ১০দিন থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যেই এই দুধ চলে আসে। এ দুধ পাতলা এবং সাদা রং এর হয়। যদিও এই দুধটা দেখতে পানির মতো, কিন্তু এটা শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় চর্বি এবং অন্যান্য পুষ্টি দিয়ে পরিপূর্ণ।

শিশুকে মায়ের বুকের দুধ ল্যাচ করানো

শুরুতে আপনার শিশুকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য অনেক চেষ্টা করতে হতে পারে, তবে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

প্রথমত, শিশুকে ভালোমতো ল্যাচ (Latch) করতে জানতে হবে। সঠিকভাবে ল্যাচ না করার ফলে স্তনে অস্বস্তিকর অনুভূতি বা ব‍্যথা হতে পারে। 

দুধ খাওয়ানোর সময় শিশুকে মায়ের দুধের বোঁটার সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের কালো অংশটুকুও (এরিওলা) মুখের ভেতর ঢুকিয়ে নিতে হবে। যেন শিশুর মুখ, জিহ্বা এবং ঠোঁট আপনার দুধের গ্রন্থি থেকে দুধ ম্যাসাজ করে। শুধু স্তনের বোঁটা চুষলে আপনার শিশু দুধ পাবে না , কারণ যে গ্রন্থিগুলো থেকে দুধ বের হয় সেখানে ম্যাসাজ না হওয়ার ফলে দুধ আসবে না। এমনকি আপনার দুধের বোঁটাও ব্যথা করবে এবং ফাটল ধরবে।

শিশুকে সঠিকভাবে ল্যাচ করানোর কিছু উপায় –

  • দুধ খাওয়ানোর সময় শিশুর মুখ মায়ের বুকের দিকে রাখুন। শিশু যেন সহজে দুধ গিলতে পারে, তাই তার মাথা, পিঠ ও পাছা একই লাইনে থাকবে এবং শরীর মায়ের শরীরের সাথে লাগানো থাকবে। 
  • আপনার দুধের বোঁটা দিয়ে শিশুর ঠোঁটে সুড়সুড়ি দিন যেন শিশু মুখ বড় করে হাঁ করে। দেখে মনে হবে যেন একটি হাঁস। যদি আপনার শিশু মুখ খুলতে না পারে, চেষ্টা করুন কিছুটা শাল দুধ চেপে বের করে  শিশুর ঠোঁটে লাগিয়ে দিতে।
  •  যদি আপনার শিশু মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে আপনার স্তন দিয়ে তার গালে আলতো করে টোকা দিন। এটি শিশুর মাথা আপনার বুকের দিকে ঘুরিয়ে দেয় এবং সে চুষতে শুরু করে। এটি রুটিং রিফ্লেক্স হিসাবেও পরিচিত। 
  • শিশুর মুখ খোলা হয়ে গেলে তাকে আপনার বুকের দিকে এগিয়ে নিয়ে আসুন। শিশুর ওপর ঝুঁকে পড়বেন না বা আপনার দুধ শিশুর মুখে ঠেলে ঢুকিয়ে দিবেন না। শিশুকে নিজে থেকে এই উদ্যোগ নিতে দিন। আপনার দুধ ধরে রাখুন যতক্ষণ না শিশুটি শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে এবং ভালভাবে দুধ খেতে পারছে।
  • যখন আপনার শিশুর থুতনি এবং তার নাকের ডগা আপনার দুধ স্পর্শ করে তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার শিশুটি সঠিকভাবে ল্যাচ করতে পারছে। শিশুর নিচের ঠোঁট বাইরের দিকে উল্টানো থাকবে, মাছের ঠোঁটের মতো। প্রথম দিকে খাওয়ানোর সময় ল্যাচটি বার বার পরীক্ষা করুন এবং নিশ্চিত করুন যে শিশুটি যেন নিজের নীচের ঠোঁট বা জিহ্বা না চোষে।
  • শিশুর দুধ খাওয়ার দিকে লক্ষ্য করুন, সে কি সঠিকভাবে শালদুধ বা বুকের দুধ খেতে পারছে, না কি শুধু দুধের বোঁটা চুষছে। যদি শিশু বুকের দুধ খেতে পারে, তবে খাওয়া শুরু করলে আপনি শিশুর চোষা, দুধ গেলা এবং শ্বাস নেয়ার পুনরাবৃত্তির একটি স্থির প্যাটার্ন দেখতে পাবেন। তাছাড়া শিশুর গাল, চোয়াল এবং কানেও ওঠানামা বা নড়াচড়া লক্ষ্য করবেন। আপনার বুকে একবার দুধ এসে গেলে, শিশুর দুধ গেলার ঢকঢক শব্দ শুনতে পাবেন। কিন্তু আপনি যদি ক্লিকের আওয়াজ বা চোষার আওয়াজ শুনতে পান তবে বুঝতে পারবেন শিশুর ঠিকভাবে ল্যাচ করা হচ্ছে না। 

শিশুর কি সঠিকভাবে ল্যাচিং করতে সমস্যা হচ্ছে? তাহলে আপনার শিশুর মুখ থেকে আলতো হাতে একটি পরিষ্কার আঙ্গুল দিয়ে স্তনের বোঁটাটি বের করে নিয়ে আসুন। তারপর নতুন করে আপনার দুধের বোঁটা দিয়ে শিশুর ঠোঁটে সুড়সুড়ি দিন যেন শিশু মুখ বড় করে হাঁ করে। এবং দুধের বোঁটার সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের কালো অংশটুকুও (এরিওলা) মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দিন।

নবজাতককে কতক্ষণ ধরে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে

আপনি হয়তো শুনেছেন অল্প সময় নিয়ে বুকের দুধ খাওয়ালে, দুধের বোঁটায় ব্যথা হয় না বা ফাটল ধরে না। বেশি সময় নিয়ে খাওয়ানোর কারণে স্তনে ব‍্যথা হয় এমনটা আসলে নয়। বরং খাওয়ানোর পজিশন বা অবস্থান যদি ঠিক না থাকে এবং শিশু যদি সঠিকভাবে ল্যাচ করতে না পারে তাহলে ব্যথা হয় বা ফাটল ধরে।তাই প্রতিবার খাওয়ানোর মুহূর্তে, সময় নির্ধারণ না করে আপনার শিশুকে তার মতো করে সময় নিয়ে খেতে দিন। আর প্রথমদিকে শিশুরা কিছুটা লম্বা সময় ধরেই খায়। 

  • একটি শিশু সাধারণত প্রতিবার খাওয়ার সময় ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় নিয়ে খায়। তবে সব শিশু যে একই সময় ধরে খাবে এমনটা নয়। আপনার শিশুটি এর থেকে কম বা বেশি সময় নিয়েও খেতে পারে। শিশুরা সাধারণত দ্রুত বাড়ার সময়গুলিতে কিছুটা লম্বা সময় ধরে খায়। 
  • শিশুকে অবশ্যই প্রতিবার খাওয়ার সময় একটি স্তনের দুধ সম্পূর্ণভাবে শেষ করতে হবে। এরপর পরবর্তী দুধ খাবে। শিশুকে প্রতিবার দুটো স্তনই খাওয়াতে হবে এর থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তন ভালোভাবে শেষ করা। কারণ শেষের দিকের দুধে প্রচুর পুষ্টি থাকে এবং চর্বি ও ক্যালরির পরিমাণও সবথেকে বেশি থাকে। তাই শিশুর একটি দুধ খাওয়া শেষ করার আগেই মুখ থেকে টেনে বের করে পরবর্তী দুধ ঢুকিয়ে দিবেন না। আর শিশু যদি প্রথম দুধটি সম্পূর্ণভাবে খাওয়ার পর আরেকটি দুধ যদি তখনই খেতে না চায়, তাহলে পরবর্তীতে খাওয়ানোর সময় দ্বিতীয় দুধটি আগে খাওয়াবেন।  
  • শিশুর খাওয়া শেষ – এমন কোন সংকেতের জন্য অপেক্ষা করুন। খাওয়া শেষ হলে সে দুধের বোঁটা এমিনতেই মুখ থেকে বের করে দিবে। আর শিশু যদি এমনটা না করে তবে তার খাওয়া শেষের দিকে হলে সে খুব ধীরে ধীরে চুষতে থাকবে এবং প্রায়ই একটা দুধ খেয়ে ঘুমিয়ে যাবে। তখন ধীরে ধীরে শিশুর মুখ থেকে দুধের বোঁটাটি বের করে আনুন।
কতক্ষণ পরপর খাওয়াতে হবে

শিশু যখন ক্ষুধার্ত থাকে তখনই তাকে খাওয়ানো উচিত। কিন্তু যেহেতু শিশুরা ক্ষুধাবোধ নিয়ে জন্মায় না, তাদের ক্ষুধাবোধ সাধারণত জন্মের তৃতীয় দিন থেকে তৈরি হয়। তাই ধারণা করা হয় প্রথম দিকে খুব বেশি চাহিদা থাকবে না। আপনাকে নিজের চেষ্টায় কিছুটা জোর করে হলেও খাওয়ানো শুরু করতে হবে।

একটি নবজাতককে প্রতি ২৪ ঘন্টা অন্তত ৮ থেকে ১২ বার খাওয়ানো উচিত। এমনকি যদি তার চাহিদা এতোটা নাও থাকে, তবুও প্রথম কয়েক সপ্তাহ ঘড়ি ধরে খাওয়াতে হবে। সাধারণত ডাক্তাররা শিশুদের প্রতি ২ ঘণ্টা পরপর খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। 

সব শিশু একরকম ভাবে খায় না। একেক জনের খাওয়ার ধরন একেক রকম। কেউ হয়তো লম্বা সময় ধরে খায়, আবার কেউ হয়তো খুব অল্প সময় খেয়ে ছেড়ে দেয়। আপনার শিশুর খাওয়ার ধরন বুঝে একটু  বেশি বা কম ঘন ঘন দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। আপনার শিশু যদি বেশি ক্ষুধার্ত থাকে বা অধৈর্য হয়ে পড়ে তাহলে আপনি ১ ঘন্টা পরপরও খাওয়াতে পারেন। অন্যদিকে একটি শান্তশিষ্ট শিশু ৩ থেকে ৪.৫ ঘন্টা পর্যন্ত খাবারের মাঝে বিরতি দিতে পারে। আপনার যদি মনে হয় আপনাকে খুব ঘনঘন খাওয়াতে হচ্ছে, তাহলেও চিন্তা করবেন না। কারণ, এই সময়টা ক্ষণস্থায়ী। 

আপনার দুধের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে আপনার বাচ্চা বড় হবে, এবং খাওয়ানোর মধ্যে বিরতিও দীর্ঘ হবে।

ফর্মুলা বা কৌটার দুধ খাওয়া শিশুরা সাধারণত একটু বেশি বিরতিতে খায়। কারণ মায়ের বুকের দুধ থেকে ফর্মুলা দুধ হজম হতে একটু বেশি সময় লাগে। বুকের দুধ শিশুর ফর্মুলার চেয়ে সহজে হজম হয় বলে শিশুদের পেট দ্রুত খালি হয়ে যায় এবং ঘন ঘন তৃষ্ণা পায়।

দুধে এলার্জি যতটা শোনা যায় তত বেশি হয় না
ফরমুলা দুধ যেভাবে খাওয়াতে হয়
শিশুর ক্ষুধা লাগার লক্ষণ

সাধারণত একটি শিশুর খাবারের চাহিদা বুঝে মায়ের শরীর দুধ তৈরি করে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর শিশুকে খাওয়ার অভ্যাস করানো খুবই ভালো একটি উপায়। এতে বুকের দুধের ভারসাম্য রক্ষা হয়। তাই নির্দিষ্ট সময় পরপর শিশুর যখন ক্ষুধা লাগবে তখন তাকে খেতে দিন। শিশুর কান্নার অপেক্ষা করবেন না। কান্না করা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে শিশুর অতিরিক্ত ক্ষুধা লেগে যাবে, তখন তার কষ্ট বেশী হবে। সে ছোট হলেও তার চাহিদাগুলো সে বোঝাতে পারে- 

  • আপনার বুকে নাক ঘষতে থাকবে
  • ছোট্ট শিশুটি নিজের হাত বা আপনার শার্ট বা বাহু অনবরত চুষবে
  • মুখ হাঁ করে রাখবে 
  • শিশু মুখ হাঁ করে তার মাথাটা একপাশে কাঁত করে খাবার খুঁজবে
  • এবং তার ঠোঁট বা জিহ্বা চুষতে থাকবে 
  • ঠোঁট দিয়ে চুক চুক শব্দ করতে থাকবে
  • অতিরিক্ত ক্ষুধা লেগে গেলে কান্না শুরু করবে
বুকের দুধ খাওয়ানোর অবস্থান

হাসপাতাল থেকেই সম্ভবত আপনাকে প্রাথমিকভাবে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য কোন অবস্থানে ধরতে হবে তা শিখিয়ে দিবে। তবে আস্তে আস্তে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কোন অবস্থানে ধরলে আপনার এবং বাচ্চার দু’জনের জন্যই বেশি আরামদায়ক হয়।
মনে রাখবেন, একেক শিশু ও মা একেক অবস্থানে আরাম পায়। তাই প্রথমদিকে সবগুলিই একটু একটু করে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। 

এখানে বুকের দুধ খাওয়ানোর কিছু অবস্থান/পজিশন আলোচনা করা  হলো-

  • ক্র্যাডল হোল্ড

আপনার শিশুকে এমনভাবে ধরুন যেন তার মাথা যে পাশের দুধ খাওয়াবেন সেই পাশের আপনার হাতের কনুইয়ের ভাঁজে থাকে এবং একই হাতে শিশুর বাকি শরীরের অংশও ধরুন। বিপরীত হাত দিয়ে আপনার স্তনটি ধরে রাখুন এবং আস্তে আস্তে চাপুন যাতে দুধের বোঁটা শিশুর নাকের দিকে থাকে।

  • ক্রসওভার হোল্ড

এই অবস্থানটি বেশ প্রচলিত এবং নতুন মায়ের জন্য এটি সম্ভবত  সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। আপনি যে পাশের বুকের দুধ খাওয়াবেন তার বিপরীত হাত দিয়ে আপনার শিশুর মাথাটি ধরে রাখুন। যেমন ধরুন যদি ডান পাশের দুধ খাওয়ান তবে বামহাত দিয়ে শিশুর মাথাটি ধরে রাখবেন। 

এবার আপনার খালি হাতটি দিয়ে আপনার স্তনটিকে নীচের দিক থেকে ইউ-আকারে ধরে শিশুর মুখ বরাবর রাখুন।

  • ফুটবল হোল্ড

আপনার বাচ্চাকে যে পাশ থেকে দুধ খাওয়াচ্ছেন সেই পাশে শিশুর পা আপনার বগলের নিচে রাখুন।আপনার হাত দিয়ে শিশুর মাথা এবং ঘাড় ধরে রাখুন। আপনার হাতকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য হাতের নিচে একটি বালিশ রাখতে পারেন। আর আপনার খালি হাতটি দিয়ে শিশুর মুখ আপনার বুকের দিকে কাত করে ধরুন।

প্রিম‍্যাচুর শিশু বা আকৃতি-ওজনে ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে এ পজিশনটি বেশ কার্যকরী।

  • পাশে–শোয়ানোর অবস্থান

মাঝরাতে শিশুকে খাওয়ানোর জন্য এই পজিশন বেশ কার্যকর। আপনি পাশ ফিরে শোন এবং আপনার বাচ্চাকে আপনার পাশে পাশ ফিরিয়ে শোয়ান যাতে আপনি এবং শিশু একে অপরের মুখোমুখি হন।

আপনার দুধের নিচের দিকে আপনার শিশুর মাথাটি রাখুন যাতে তার মাথাটি আপনার দুধের বোঁটার সাথে সমান অবস্থানে থাকে। প্রয়োজন হলে, আপনার শিশুর মাথা ধরে রাখার জন্য আপনার হাতের নিচের দিক ব্যবহার করুন এবং খালি হাত দিয়ে স্তন চাপ দিয়ে শিশুর মুখে ধরুন।

শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি
  • বিশ্রাম করার অবস্থান 

এই অবস্থানে, আপনি বিছানার উপর বালিশে আধা হেলান দিয়ে আরাম করে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন। বাচ্চাকে আপনার বুকের উপর শুইয়ে দিন,বাচ্চার পেট আপনার পেটের সাথে লেগে থাকবে এবং বাচ্চার মুখ আপনার দুধের উপর থাকবে। এই অবস্থানে আপনার শিশু সহজেই আপনার দুধের বোঁটা নিজে থেকে খুঁজে নিতে পারবে। মা এবং শিশুর দুজনের জন্যই এটা সবথেকে আরামদায়ক একটি অবস্থান। এছাড়াও যেসব শিশুদের ঘন ঘন বমি হয়, যাদের অনেক গ্যাসের সমস্যা থাকে, এবং যাদের পেট অনেক সংবেদনশীল, তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী একটি অবস্থান।

বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম
কিভাবে বুঝবেন আপনার শিশু ঠিকমত বুকের দুধ পাচ্ছে

অনেক সময়েই নতুন মা শিশু পর্যাপ্ত বুকের দুধ পাচ্ছে না মনে করে চিন্তিত হয়ে পড়েন। যেহেতু বাইরে থেকে দেখে বুঝা যায় না, আপনার ভেতরে কতটুকু দুধ তৈরি হচ্ছে এবং আপনার  শিশু কতটুকু খাচ্ছে। তাই কিছু লক্ষণ থেকে আপনি বুঝে নিতে পারবেন আপনার শিশুর পেট ভরেছে কিনা-

  • শিশু সন্তুষ্ট থাকবে

আপনার শিশু যদি খাওয়ার সময় খুশি খুশি থাকে এবং তাকে দেখে সন্তুষ্ট মনে হয় তাহলে বুঝতে হবে সে পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে। সম্পূর্ণ খাওয়ানোর পর যদি সে কান্নাকাটি করে এবং বিরক্তিকরভাবে আঙুল চুষতে থাকে তবে ধরে নেয়া যায় তার পেট ভরেনি সে এখনও ক্ষুধার্ত (যদিও এটি গ্যাস বা শিশুর কলিকের লক্ষণও হতে পারে)

আরো পড়ুন: শিশুর কেন গ‍্যাস হয় 

  • শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ 

শিশু দিনে কতবার প্রস্রাব করলো তা সবসময় হিসাব করে রাখবেন। শিশুর জন্মের ৩-৪ দিন পর থেকে শিশু কমপক্ষে ৬ বার থেকে ১২ বার পর্যন্ত প্রস্রাব করতে পারে। প্রস্রাবের রং হবে পরিষ্কার বা ফ্যাকাশে হলুদ। শুরুর দিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ বার নরম, হলুদ রঙের পায়খানা করবে। প্রথম কয়েক সপ্তাহ শিশুকে কতবার বুকের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে এবং কতবার প্রস্রাব-পায়খানা করছে তার হিসাব রাখা ভালো। যা আপনি পরবর্তীতে আপনার শিশুর ডাক্তারের কাছে জানাতে পারবেন। 

  • ওজন বাড়বে

প্রতিটি মা-ই সন্তানের ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকেন। প্রথম সপ্তাহ শিশুর ওজন ওঠানামা করাটা স্বাভাবিক। তবে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শিশুর ওজন ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। সাধারণত একটি নবজাতকের প্রতি সপ্তাহে ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম করে ওজন বাড়ার স্বাভাবিক। যদিও ওজন বৃদ্ধি বয়স এবং অন্যান্য কারণের উপর নির্ভর করে। আপনার শিশুর ওজন ঠিকভাবে বাড়ছে কিনা তার ডাক্তারের থেকে জেনে নিবেন।

আরো পড়ুন: শিশুর ওজন ঠিক আছে কিনা কিভাবে বুঝবো?

শিশুর পেটে গ‍্যাস কেন হয়
বুকের দুধ খাওয়ানোর কিছু টিপস

শিশুকে কিভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করবেন ভেবে ভয় পাচ্ছেন? এই টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি এবং আপনার শিশু অনেক উপকৃত হবেন এবং আপনি নিজেও অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন।

 আপনার ডেলিভারির আগে 

  • শিশু জন্মানোর পর কিভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করবেন সেটা নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। এ বিষয়ে আগে থেকে জেনে রাখলে আপনি একধাপ এগিয়ে থাকবেন। যেটা পরবর্তিতে আপনার আত্মবিশ্বাস জোগাবে। 
  • শিশু জন্মানোর আগেই আপনার এবং শিশুর জন্য হাসপাতালে একটি রুমের ব্যবস্থা করে রাখবেন। জন্মের পর শিশুকে দূরে বা অন্য বিছানায় না রেখে, বেশি সময় নিজের কাছে রাখবেন। শিশু যত বেশি মায়ের কাছাকাছি থাকবে,তাকে খাওয়ানো ততো বেশি সহজ হবে। 

হাসপাতালে থাকার সময় 

  • জন্মের পর পরই শিশুকে দ্রুত খাওয়ানোর ব্যবস্থা করুন। শিশুরা দুধ খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই জন্ম নেয় এবং জন্মের পর প্রথম দুই ঘণ্টার মধ্যেই দুধ খাওয়ার অনেক আগ্রহ দেখায়। জন্মের ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যেই সে ঠিকভাবে চুষে খেতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিশুকে বুকের দুধ খেতে দিন। তবে সব ক্ষেত্রে পরিস্থিতি একরকম থাকে না। কখনো মায়ের বুকে দুধ আসতে দেরি হয় আবার কখনও দেখা যায় শিশুর বুকের দুধ টেনে খেতে সময় লাগে। তাই চাপ নিবেন না, সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। 
  • শিশুর জন্মের পরই হাসপাতালে নার্সদের কে জানিয়ে দিবেন তারা যেন শিশুকে শান্ত করার জন্য বোতল দিয়ে দুধ না খাওয়ায়। শুরু থেকেই শিশু যদি শুধু মায়ের বুকের দুধ খায় তবে আপনার বুকে দুধ আসার পরিমাণও বাড়বে। 
  • একজন ল্যাকটেশন কনসালটেন্ট এর সাথে কথা বলুন। সব হাসপাতালেই শিশুকে কিভাবে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়ার জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট থাকে। কিভাবে আপনি বাচ্চাকে খাওয়াবে,  কোন পজিশনে বাচ্চাকে ধরবে,  কী করলে আপনার বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে, আপনার শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাচ্ছে কিনা, এ সব বিষয় সেখানে আপনাকে ভালো করে শিখিয়ে দিবে।

যখন বাড়ি ফিরবেন 

  • বাড়ি ফিরে শান্ত এবং নিরিবিলি পরিবেশে শিশুকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করবেন।বেশি লোকজনের ভিড় এড়িয়ে এবং মেহমানদারী বাদ দিয়ে নিজেকে এবং শিশুকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিবেন।শিশুকে অন্য খাবার শুরু করার আগ পর্যন্ত  শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোতেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন। 
  • শিশুকে খাওয়ানোর জন্য আরামদায়ক অবস্থান বেছে নিন। যেন আপনি এবং শিশু দুজনেই খাওয়ানোর মূহূর্তটাকে উপভোগ করতে পারেন। আপনার যদি সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়ে থাকে তবে এমনভাবে বসুন যেন আপনার কাটা জায়গায় ব্যথা না পান। বা চাইলে বিছানায় আধশোয়া হয়েও আরাম করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন।

    ব্রেস্টফিডিং পিলো কিনতে পারেন: www.facebook.com/paromita.baby
  • বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালে মায়ের প্রচুর তৃষ্ণা পায়। এজন্য এসময়ে মায়ের প্রচুর তরল জাতীয় খাবার খাওয়া দরকার। যেমন পানি, দুধ বা কোন ফলের রস। এ সময়ে আপনার পানিশূন্যতা হলে বাচ্চা পর্যাপ্ত দুধ পাবে না।  
  • প্রথম কিছুদিন আপনার শিশুর চাহিদা অনুযায়ী আপনার দুধের সরবরাহ থাকে। এ সময়ে শিশুর চাহিদা এতই কম থাকে যে শুধুমাত্র শালদুধ দিয়েই সেটা পূরণ হয়ে যায়। তাই এই সময়ে আপনার বুকের দুধের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য প্রচুর পাম্প করুন। আপনার বুকে পুরোপুরি দুধ এসে গেলেও এই পাম্প করা চালিয়ে যাবেন।

ইলেকট্রিক পাম্প কিভাবে ব‍্যবহার করে

ম‍্যানুয়াল পাম্প ব‍্যবহারের নিয়ম

  • পাশ বদলান। শিশু একপাশের দুধ পুরোপুরি খাওয়া শেষ করার পর অন্য পাশের দুধ খেতে দিন। যদি এক পাশের দুধ খাওয়ার পর দ্বিতীয় দুধটি তখনই খেতে না চায় তাহলে পরবর্তী খাওয়ার সময়ে দ্বিতীয় দুধটি আগে খাওয়াবেন। আপনার বুক থেকে যদি সবসময় দুধ গড়িয়ে পড়তে থাকে তাহলে একটি নার্সিং প্যাড বা টিস্যু ব্যবহার করতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো ব্রা এর ভেতরে মিল্ক কালেক্টর পরে বুকের দুধ জমানো। জমানো বুকের দুধ শিশুকে খাওয়ানো ছাড়াও অনেক কাজে লাগে। 

বুকের দুধ সঠিক নিয়মে সংরক্ষণ করা/জমিয়ে রাখা খুবই দরকারি!

  • শিশুকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় ( ২ ঘন্টা) পর পর খাওয়াবেন। খাওয়ার মাঝে কখনোই লম্বা বিরতি দিবেন না। আপনার বুকের দুধ তৈরি হয় মূলত শিশু কত ঘন ঘন খাচ্ছে, কত সময় নিয়ে খাচ্ছে, তার উপর। শিশুর চাহিদা যত বেশি হবে, আপনার শরীর ততবেশি দুধ তৈরি করবে। তাই শিশুকে ঘন ঘন না খাওয়ালে, অল্প সময় নিয়ে খাওয়ালে, বা খাওয়ার মাঝে শিশুকে বেশি সময় ঘুমাতে দিলে আপনার বুকের দুধের পরিমাণ কমে যাবে। 
  • শিশু সঠিকভাবে দুধ খেতে না পারলে আপনার দুধের বোঁটা ব্যথা হবে বা ফেটে যেতে পারে। বিশেষ করে নতুন মায়ের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। এসময় ফ্রিজে রাখা নিপল বাটার ক্রিম আপনাকে অনেক আরাম দেবে। নিপল বাটার ক্রিম না থাকলে অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল ব্যবহার করুন।

    নিপল বাটার ক্রিম কিনতে পারবেন: facebook.com/paromita.baby

মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। এ সময়ে কিছুটা অস্থিরবোধ করা স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত উত্তেজনা আপনার দুধের সরবরাহ কমিয়ে দিতে পারে। তাই আপনি চাইলে দুধ খাওয়ানোর আগে রিল্যাক্সড হওয়ার জন্য ব্যায়াম করে নিতে পারেন। বা গভীরভাবে শ্বাস নিন, চোখ বন্ধ করুন, গান শুনুন। আপনি হাসি খুশি থাকলে আপনার বাচ্চাও ভালো থাকবে।

বুকের দুধ খাওয়ানোর সহায়তা পাওয়া

আপনি কি সঠিক উপায়ে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারছেন না? বা কোনো ভুল হচ্ছে যেটা শুধরে নেয়ার জন্য সাহায্য প্রয়োজন বলে মনে করছেন? বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে যা একজন বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ সহকর্মীরা আপনাকে সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। আপনার কোন সমস্যা হলে আপনি যাদের সাথে যোগাযোগ করবেন –

  • আপনার শিশুর ডাক্তারের সাথে 
  • একজন অভিজ্ঞ ল্যাকটেশন কনসালটেন্টের সাথে
  • একজন নার্স যে এ বিষয়ে অভিজ্ঞ
  • বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের গ্রুপের সাথে  
  • বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের অন্য মানুষের সাথে যারা শিশু লালন পালন করেছে বা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ায়। 

আপনি যদি পেশাদার সাহায্য নেওয়ার পরেও শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে সমস্যা বোধ করেন তবে ধরে নিবেন এখানে আপনার আর কিছু করার নেই। তাই মন খারাপ না করে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন যে, শিশুকে ফরমুলা দুধ দেয়া যাবে কিনা। কোন ফরমুলা তার জন‍্য ভালো হবে।

মনে রাখবেন, একটি শিশুর তার মায়ের কাছ থেকে ভালোবাসা এবং মনোযোগের প্রয়োজন। শিশুর জন্য দুধ, মায়ের বুক থেকে আসে না বোতল থেকে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। 

 

এ লেখাটি আমেরিকান অ‍্যাকাডেমি অব পিডিয়াট্রিকস (AAP) এর গাইডলাইনের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। 

তাদের ওয়েবসাইট লিংক: https://www.aap.org

Comments (02)

  1. Marina Parvin
    April 4, 2024

    আপু বাবুর বয়স ২ বছর। ব্রেস্ট ফিডিং অফ করেছি দুইদিন হলো। ব্রেস্টে অনেক ব্যাথা আর ব্রেস্ট দুধ জমে শক্ত হয়ে গিয়েছে। কি করতে পারি এই অবস্থায়। জরুরি পরামর্শ দরকার। প্লিজ হেল্প।

    Reply
    • April 5, 2024

      দুধ আছে যখন খাওয়ালেই ভালো। নাহয় পাম্প করে ফেলুন।

      Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *